
দাওয়াতের কয়েকটি মূলনীতি
সকল হামদ সানা আল্লাহর যিনি আমাদের কে মানুষ বানিয়েছেন শুধু তাই নয় মেহেরবাণী করে ঈমানের মত মহাধৌলত দিয়েছেন আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন নবীওয়ালা কাজ তথা দাওয়াতের মেহনত যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন قل هذه سبيلى ادعوالى الله على بصيرة أنا ومن اتبعنى অর্থ : বল ইহাই আমার পথ আল্লাহর প্রতি মানুষ কে আমি আহŸান করি আমি এবং আমার অনুসারীগণও। ( সুরা ইউসুফ ১০৮)
সম্মানিত পাঠক বৃন্দ দাওয়াত আমাদের কাজ দাওয়াত দিলে আমরা রাসুলের অনুসারী হতে পারবো রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুসংবাদ শুনিয়েছেন, কাল কেয়ামতের ময়দানে যারা রাসুলের অনুসারী হয়ে ওঠবে, তারাই রাসুলের সাফআত পাবে । তারাই হাওজে কাউছারের পানি প্রাণ করবে এই জন্য দাওয়াতকে আমাদের জীবনের লক্ষ উদ্দেশ্য বানাতে হবে, এখন জানার বিষয় “কোন বিষয়ের দাওয়াত দিবো”। আমাদের সর্ব প্রথম দাওয়াত দিতে হবে ঈমানের, ঈমানেই আসল সম্পদ । আজকে বিশ্বে কোটি কোটি মানুষ ঈমান হারা শুধু তাই নয় তারা চাচ্ছে বাকিরা ও ঈমান হারা হোক । এজন্য যত কলাকৌশল দরকার সবই তারা ব্যবহার করছে । আমরা কি এসবের খবর রাখি ? ওই দিকে নানা কারণে আমরাও দলাদলিতে লিপ্ত পাশাপাশি আমাদের অনেক ভাই রাত দিন বেহুদা আলাপআলোচনায় লিপ্ত হচ্ছে। যার ফলে তারা ঈমানের মত মহাসম্পদ কে হারাচ্ছে অথচ তাদের কোন খবর নেই। এই জন্য সকল মুমিন ভাই ভাই। এআদর্শ চেতনা কে সামনে রেখে সকল মতভেদকে ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার । দরকার আমাদের ঈমানকে হেফাজত করা। সকল ঈমান হারাকে ঈমানের দাওয়াত দেওয়া । এজন্য প্রয়োজন সুন্নাহ সম্মত দাওয়াতের সকল পথও পন্থা ।
সম্মানিত পাঠক বৃন্দ আমাদের জানা কথা ঈমানে পরে সর্ব প্রথম হুকুম হল নামাজ। এই জন্য নামাজের লাভ ও গুরুত্ব জানিয়া নামাজি বে নামাজিকে নামাজের দাওয়াত দেওয়া তবে নামাজিকে দাওয়াব বিবে সে যেন তার নামাজ সময় মত গুরুত্ব সহকারে আদায় করে এবং তাকে দাওয়াত দিবে সে যে তার নামাজ কে খূশূ খুজুর সাথে আদায় করে আর বে নামাজিকে দাওয়াত দিবে সর্ব প্রথম সে যেন মসজিদে আসে তারপর তাকে নামাজের সব হুকুম শিখিয়ে নামাজে লাগিয়ে রাখা এমন যেন না হয় যে কয়েক জন নামাজে আসছে তাদেরকে উৎসাহ না দিয়ে বরং তাদের নামাজের বিষয়ে আরো সংসয়ের দিকে ঠেলে দেওয়া হল। এটা অনেক গর্হিত কাজ । এটা অবশ্যই বর্জনীয় । অন্যথায় আমাদের এই অনর্থক কলহ বিবাদে কুফুরি শক্তি হাসবে। তারা আমাদের ক্ষতি করার দুঃসাহস পাবে। তাই দ্বীনের স্বার্থে এই গুলি পরিহার করুন।
সম্মানিত পাঠক বৃন্দ ! তার পর রোযা, হজ্জ, যাকাত সহ সকল ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত, মুস্তাহাব এর দাওয়াত দেওয়া গুরুত্ব দেওয়া সকল সিপাতে হামীদা তথা সকল নেক কাজের। শরীমূল নীতি ঠিক রেখে সুন্দর উপায় পরিহার করানো । শিরক বিদয়াত সহ সকল সিপাতে রযীলা তথা গুনার উপকরণ । মোট কথা শরিয়াতের সর্বসম¥ত বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দেয়া যেন এই গুলি আমাদের আমলে এসে যায়। এজন্য বার বার আমলি মশক করে দাওয়াত দেয়া। এমন যেন নাহয় কোন মোবাহ বিষয়ে বাড়া বাড়ি করা হল । বা যে বিষয়ে শরীয়াতের একাদিক সুন্নাহ এর সুযোগ রয়েছে । সে বিষয়ে পরষ্পরায় চলে আসা এক সুন্নাহ বাদ দিয়ে আরেক সুন্নাহ চালুর জন্য কলহ বিবাদে লেগে যাওয়া হল এইটা অত্যন্ত অন্যায়। এই পদ্ধতি খাইরুল কুরুন তথা সাহাবা-তাবেয়ীদের যুগে ছিলনা। হ্যাঁ যে সব বিষয়ে সুন্নাহ মাত্র একটি যেখানে সে সুন্নাহর বিষয়ে অবহেলা করা হলে গুরুত্ব দিয়ে সুন্নাহর দিকে দাওয়াত দেয়া। তদরুপ কেউ সুন্নাহ ছেড়ে বিদআতে লিপ্ত হলে তাকে বাদা দিয়ে সুন্নাহর দিকে আসার দাওয়াত দেয়া। এ দাওয়াত সালাফের যুগে ছিল । যেহেতু সুন্নাহ মোতাবেক আমল হওয়াই উদ্দেশ্য । তাই যে এলাকায় যে সুন্নাহের উপর আমল হচ্ছে এবং যে মসজিদে যে সুন্নাহর অনুসরণ হচ্ছে সে খানে সে সুন্নাহ বহাল থাকতে দেওয়া উচিত। ঐ এলাকায় ঐ মসজিদে সাধারণ মানুষকে দি¦তীয় সুন্নাহর দিকে দাওয়াত দেওয়া মোটেই উচিত নয় । এপ্রসংঙ্গে শাহ ইসমাইল শহীদ রহ. এর ঘটনাটি উল্লেখ যোগ্য । তিনি একবার রুকু ইত্যাদিতে রাফয়ে ইয়াদাইন করতে শুরু করেছিলেন অথচ সে সময় ভারত বর্ষের সর্বত্র (ক্ষুদ্র কিছু এলাকা ছাড়া যে খানে ফিখহে শাফিই অনুযায়ীক আমল হত) তাকবীরে তহরীমা ছাড়া অন্য কোন স্থানে রাফয়ে ইয়াদাইন না করার সুন্নাত প্রচলিত ছিল । শাহ ইসমাইল শহীদ রহ. এর বক্তব্য এই ছিল যে মৃত সুন্নাত জীবিত করার সাওয়াব অনেক বেশি। হাদিস শরীফে এ বিষয়ে অনেক উৎসাহ এসেছে যেমন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, من تمسك بسنتي عندفساد امتي فله اجرمأة سهي উম্মাহর ফাসাদের মুহুর্তে যে আমার সুন্নাহকে ধারণ করে সে একশত শহীদের মর্যাদা পাবে তখন তার সম্মানিত চাচা হযরত মাওলানা আবদুল কাদের দেহলভী রহ. তার এধারণাকে সংশোধন করেদেন। তিনি বলেন মৃত সুন্নাহকে জীবিত করার ফজীলত যে, হাদিসে এসেছে সেখানে বলা হয়েছে যে উম্মাহর ফাসাদের সময় যে সুন্নাকে ধারণ করে তার জন্য এই ফজীলত । সুতারং কোন বিষয়ে যদি দুটো পদ্ধতি থাকে এবং দুটোই সুন্নাহ ভিত্তিক হয় । তাহলে দুটোর কোন একটিকে ফাসাদ বলা যায় না । সুন্নাহর বিপরীতে শিরক ও বিদয়াত হল ফাসাদ । কিন্তÍ দ্বিতীয় সুন্নাহ কোন ফাসাদ নয়। কেননা দুটোই সুন্নাহ। অতয়েব রাফয়ে ইয়াদাইন না করাও যখন সুন্নাহ কোথাও এই সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করতে থাকলে সে খানে রাফয়ে ইয়াদাইন এর সুন্নাহ জীবিত করে উপরোক্ত সাওয়াবের আশা করা ভুল। এটা ঐহাদিসের ভুল প্রয়োগ । কেননা এতে পরক্ষভাবে দ্বিতীয় সুন্নাকে ফাসাদ বলে। যা কোন মতে সঠিক নয় । এর দ্বরাা বুঝা গেল সুন্নাহর উপর আমল করারও নির্ধারিত পন্থা রয়েছে। এপন্থার বাইরে গেলে সেটা আর শরীয়ত সম্মত সুন্নাহ অনুসরণ থাকে না । তাই খেয়াল রাখব ইতিবায়ে সুন্নাতেরও মাসনুন পদ্ধতি আছে
সম্মানিত পাঠক বৃন্দ আপনাদেরকে আরেক কথা বলে আমি আমার আলোচনা শেষ করছি । সমাজের সর্বস্তরে ও জীবনের সকল অঙ্গনে দ্বীনের সকল আহকামের বাস্তবায়নের জন্য রয়েছে দাওয়াতের বিভিন্ন পদ্ধতি যেমন ওয়াজ নসিহত তালিম ও তাযকিয়াহ, তারগিব তারহিব আমর বিল মা’রুফ নাহিআনিল মুনকার ািজহাদ রাষ্ট্রের কর্ণধারদের অন্যায় ও গর্হিত কর্ম থেকে বিরত রাখার জন্য সাংগঠনিক তৎপরতা আরো বহু শাখা প্রশাখা । পৃথিবীর ক্ষণজন্মা ছাড়া একজন বা এক শ্রেণির মানুষের পক্ষে দ্বীনের সকল শাখার জিম্মাদারি আদায় করা কাম্য ও নয় সম্ভবও নয় । এই কারণে যার জন্য যে শাখার জিম্মাদারি সহজ হয় সে উক্ত জিম্মাদারি আদায় করবে । আর অন্য শাখায় দাওয়াতের জিম্মাদারী আদায় না করতে পারায় লজ্জিত হবে । অন্যদের কে অন্য শাখায় মেহনত করার কারণে নিজের মুহসিন মনে করবে তাদের মোরারকবাদ দিবে উৎসাহ দিবে আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে সকল সম্মানিত পাঠককে তামাম মুসলমানদের কে দাওয়াতের সকল মূল নীতি মেনে দাওয়াত দেওয়ার জন্য তৌফিক দান করুক। (আমীন)